শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন
রাজধানীতে ডেভেলপার কোম্পানি খুলে ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণা করে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আবদুর রহমান রাজুসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ১৫ মে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম স্কোয়াডের পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা করেন। মামলায় আবদুর রহমান রাজু ছাড়াও তার স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন পারুল, শাশুড়ি আকলিমা বেগম মঞ্জু ও তার ভাই সাজুকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজু, পারুল ও সাজুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালত তাদের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি আবদুর রহমান রাজু ও তার স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন পারুল ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল যৌথ মূলধনী কোম্পানি গ্রিন হোম প্রোপার্টিজ লিমিটেড (রেজি: নং সি-৭৬৭১৫) গঠন করেন। এরপর প্রতারণার উদ্দেশ্যে তারা সুলতানা রাজিয়া ও তার তিন মেয়ের কাছ থেকে ০৪৫৬ অযুতাংশ, মো. সাহাবুদ্দিন হাওলাদারের কাছ থেকে ০৭৯৬ অযুতাংশ, সরফরাজের কাছ থেকে ০৪১২.৫ অযুতাংশ, সোরহাব হোসেনের কাছ থেকে ৮০৮ অযুতাংশ, আমান উল্লাহ মন্টুর কাছ থেকে ৪৩.৭৫ শতাংশ জমিতে বাণিজ্যিক কাম আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য চুক্তিতে আবদ্ধ হন। ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত একাধিক ফ্ল্যাট ক্রেতার কাছ থেকে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ১৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন স্বামী-স্ত্রী। তারা মাহবুবুল হক জিলানীর কাছ থেকে ১৬ লাখ, দেলোয়ার হোসেন মোল্লার কাছ থেকে ১০ লাখ, শান্তনা দাসের কাছ থেকে ১৫ লাখ, সেলিনা আক্তারের কাছ থেকে ২৪ লাখ ৮৪ হাজার, নাসিমা খাতুনের কাছ থেকে ১০ লাখ, মঞ্জুরুল হক মামুনের কাছ থেকে তিন লাখ, আলীমুজ্জামান ভুইয়ার কাছ থেকে তিন লাখ, এমএ আক্তারুজ্জামানের কাছ থেকে ১৫ লাখ, আয়শা সিদ্দিকার কাছ থেকে ১৭ লাখ, মোহসেনা বেগমের কাছ থেকে ২০ লাখ, সুজন সরকার ও রনজিত সরকারের কাছ থেকে ১০ লাখ, আলতাফ আলমের কাছ থেকে ১০ লাখ ৬০ হাজার, নাসিমা আক্তারের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা নেন।
ফ্ল্যাট ক্রেতারা জানান, তারা ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে মানি রিসিটের মাধ্যমে টাকা দেন। কিছু দিন কাজ করার পর আসামি আব্দুর রহমান রাজু কাজ বন্ধ করে দিয়ে তার সহযোগীদের নিয়ে আত্মগোপন করেন। প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকা রাজু বিভিন্ন কাগুজে বা বেনামি প্রতিষ্ঠানে লেনদেনের মাধ্যমে বৈধ করার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া অর্থের একটি অংশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার তানজানিয়ায় পাচার করেন। বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি ব্যতীত ২০১৩ সালের ২৭ মে তানজানিয়ায় গ্রিন বাংলা লিমিটেড নামে কোম্পানি গঠন করে সেখানে বিনিয়োগ করে। ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, তানজানিয়ায় ৩০০ কোটি স্থানীয় মুদ্রা ফিক্সড ডিপোজিট করে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ। অপরাধলব্ধ আয়কে বৈধ করার জন্য আসামি আবদুর রহমান রাজু ও তার স্ত্রী আসামি আম্বিয়া খাতুন পারুল তানজানিয়া থেকে ওই টাকার কিছু পরিমাণ অর্থ আসামি আকলিমা বেগম মঞ্জুর নামে বাংলাদেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠান। এসব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।